কোচি ডায়লগ ২০২৫-এ অন্যতম আকর্ষণীয় দিক হল জিসিসি’র সেক্রেটারি জেনারেল জাসেম মোহাম্মদ আল-বুদাইউই’র উপস্থিতি
কূটনীতি ও সংলাপের জন্য একটি অনন্য প্ল্যাটফর্ম
কোচি ডায়লগ ২০২৫ হল কেরালায় প্রথম ট্র্যাক ১.৫ কূটনৈতিক সম্মেলন। এটি উচ্চ পর্যায়ের সরকারি আলোচনার (ট্র্যাক ১) সঙ্গে বিশেষজ্ঞ ও ব্যবসায়িক আলোচনার (ট্র্যাক ২) সমন্বয় ঘটিয়ে একটি দ্বৈত-কেন্দ্রিক প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলেছে। এই মঞ্চটি ভূরাজনীতি, সুশাসন, বাণিজ্য, এবং নিরাপত্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কার্যকরী সহযোগিতা তৈরির লক্ষ্যে কাজ করবে।
দুই দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানে জিসিসি সদস্য রাষ্ট্র এবং ভারতের নীতি-নির্ধারক, শিল্পনেতা, কূটনীতিক এবং বিশেষজ্ঞরা পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ থিম নিয়ে আলোচনা করবেন: বাণিজ্য, অর্থনীতি এবং বিনিয়োগ; সামুদ্রিক কৌশলগত অংশীদারিত্ব; শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং প্রযুক্তি; প্রবাসী সংযোগ; জ্বালানি সহযোগিতা ও উদ্ভাবন
ভারতের লুক ওয়েস্ট নীতির কার্যক্রম
ভারতের লুক ওয়েস্ট নীতির অধীনে এই আলোচনা বাণিজ্য, বিনিয়োগ, এবং কৌশলগত স্থিতিশীলতার মতো খাতগুলোতে ভারত-জিসিসি সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার উপায় খুঁজে বের করবে। অনুষ্ঠানের প্রধান আকর্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে: মন্ত্রী এবং সচিব পর্যায়ের আলোচনা; আন্তঃখাত জ্ঞান বিনিময় অধিবেশন; ব্যবসায়িক নেটওয়ার্কিং ও বিনিয়োগের সুযোগ; কার্যকরী পরিবর্তনের জন্য নীতি-সংক্রান্ত সুপারিশ এবং প্রকাশনা
জিসিসি দেশগুলোতে ৮ মিলিয়নেরও বেশি ভারতীয় প্রবাসীর উপস্থিতি, যারা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং সাংস্কৃতিক কূটনীতিকে শক্তিশালী করে, এই আলোচনার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠবে।
উচ্চ-প্রোফাইল অংশগ্রহণ
কোচি ডায়লগ ২০২৫-এর অন্যতম আকর্ষণীয় দিক হল জাসেম মোহাম্মদ আল-বুদাইউই, জিসিসি’র সেক্রেটারি জেনারেলের উপস্থিতি। তার পাশাপাশি বিশিষ্ট নীতি-নির্ধারক ও শিল্পনেতাদের অংশগ্রহণ এই দ্বিপাক্ষিক সংলাপের গুরুত্ব তুলে ধরে।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত থাকবেন, ড. এবতেসাম আল-কেতবি, এমিরেটস পলিসি সেন্টারের প্রেসিডেন্ট; অ্যাডমিরাল (অবসরপ্রাপ্ত) সুনীল লাম্বা, ভারতের প্রাক্তন নৌপ্রধান
এই বিশিষ্ট বাণিজ্য চুক্তি, ভারত মহাসাগরের সামুদ্রিক নিরাপত্তা, এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় উদ্ভাবনী সহযোগিতার বিষয়ে বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরবেন।
কৌশলগত থিম এবং প্রত্যাশিত ফলাফল
কোচি ডায়লগ ২০২৫-এর লক্ষ্য সহযোগিতার মূল ক্ষেত্রগুলোকে আরও শক্তিশালী করা:
বাণিজ্য ও বিনিয়োগ: সিইপিএ-এর মতো কাঠামো ব্যবহার করে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি।
সামুদ্রিক নিরাপত্তা: বৈশ্বিক বাণিজ্য ও জ্বালানি পরিবহনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভারত মহাসাগর সুরক্ষায় অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি।
শিক্ষা ও উদ্ভাবন: টেকসই উন্নয়নের জন্য শিক্ষা, প্রযুক্তি ও স্বাস্থ্যসেবায় সহযোগিতা সম্প্রসারণ।
জ্বালানি ও উদ্ভাবন: বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়ে জ্বালানি নিরাপত্তা ও উদ্ভাবনমূলক সমাধান অন্বেষণ।
প্রবাসী সম্পৃক্ততা: অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্ক জোরদারে ভারতীয় প্রবাসীদের অবদানের ওপর আলোকপাত।
কূটনীতির কেন্দ্র হিসেবে কোচির অবস্থান
কোচি ডায়লগ ২০২৫ আয়োজনের মাধ্যমে কেরালা নিজেকে বুদ্ধিবৃত্তিক বিনিময় ও নীতি উদ্ভাবনের কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার পথে। এই অনুষ্ঠান ভারতের বৃহত্তর লক্ষ্যগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যেমন জ্বালানি অংশীদারিত্ব সুরক্ষা, বাণিজ্য সম্প্রসারণ, এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি।
কোচি ডায়লগ ২০২৫ ভারত-জিসিসি সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক। এটি সহযোগিতা, উদ্ভাবন এবং পারস্পরিক অগ্রগতির জন্য ভারতের প্রতিশ্রুতি জোরদার করে। কৌশলগত মনোযোগ এবং উচ্চ পর্যায়ের অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই আলোচনা ভারত-জিসিসি সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে আরও টেকসই অংশীদারিত্ব গড়ে তুলবে। সূত্র: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক