এবার ভারতের ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম, ইউপিআই শ্রীলঙ্কাতেও প্রযোজ্য হবে বলেও এদিনের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে স্থির হয়েছে।
শ্রীলঙ্কার সংকটের সময় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল ভারত। এবার ভারতে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানালেন শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি রনিল বিক্রমাসিংহে। আজ, শুক্রবার শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতিকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তারপর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে হায়দরাবাদ হাউসে শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “ভারতের ‘নেবারহুড ফার্স্ট’ নীতি এবং ‘সাগর লক্ষ্যে শ্রীলঙ্কা ও ভারত গুরুত্বপূর্ণ দুটি স্থান। দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে আজ আমরা আমাদের ভাবনা-চিন্তা আলোচনা করেছি। আমরা বিশ্বাস করি যে, নিরাপত্তা এবং উন্নয়নে ভারত ও শ্রীলঙ্কা পরস্পরের সঙ্গে জড়িত।”

বিদেশমন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, দু-দিনের ভারত সফরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাতেই নয়া দিল্লিতে এসে পৌঁছেছেন শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি রনিল বিক্রমাসিংহে। বিমানবন্দরে তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান বিদেশমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী ভি. মুরলীধরন। তারপর পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুসারে এদিন সকালে হায়দরাবাদ হাউসে শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি রনিল বিক্রমাসিংহের সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

এই বৈঠক প্রসঙ্গে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেন, “হায়দরাবাদ হাউসে শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি রনিল বিক্রমাসিংহের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসেছন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। চলতি বছর দুই দেশের সম্পর্কের ৭৫ বছর উদযাপন উপলক্ষ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করাই লক্ষ্যেই এই পর্যালোচনা বৈঠক।”

এদিনের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্ক দৃঢ় করার পাশাপাশি পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন নির্মাণ সহ দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়। দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে বেশ কয়েকটি চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়। যার মধ্যে অন্যতম পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন নির্মাণ এবং ইউপিআই সিস্টেম। এবার ভারতের ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম, ইউপিআই শ্রীলঙ্কাতেও প্রযোজ্য হবে বলেও এদিনের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে স্থির হয়েছে।

এছাড়া বছরের বিভিন্ন সময়ে মাছ ধরতে গিয়ে ভারতের নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে গেলে শ্রীলঙ্কার নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে আটক হন। সেই সমস্যা নিয়েও দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। গোটা বিষয়টি মানবিক দিক থেকে দেখার জন্য শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিন প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে পরিকাঠামো ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ব্যাপারেও কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি রনিল বিক্রমাসিংহে বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং আমি বিশ্বাস করি যে, ভারতের দক্ষিণ অংশ থেকে শ্রীলঙ্কায় একটি বহু-প্রকল্প পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন নির্মাণ শ্রীলঙ্কায় শক্তির সংস্থানগুলির একটি সাশ্রয়ী মূল্যের এবং নির্ভরযোগ্য সরবরাহ নিশ্চিত করবে।” সংকটের সময়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘অমূল্য সমর্থন’ দিয়েছিলেন জানিয়ে তাঁকে এবং ভারত সরকারকে ধন্যবাদও জানান শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক