যুক্তরাজ্যে ভারতীয় মিশন ও কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়টি প্রথম অগ্রাধিকার হিসেবে ক্লেভারলিকে জানান জয়শঙ্কর।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি ভারতে বিবিসির অফিসে আয়কর তল্লাশির প্রসঙ্গ তুললেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের কাছে। জি-২০ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্মেলনে যোগ দিতে ইন্দোনেশিয়া এসে শুক্রবার তিনি এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন।

গত বছরের ডিসেম্বর মাসে গুজরাট দাঙ্গা নিয়ে তৈরি বিবিসির তথ্যচিত্র ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদী কোয়েশ্চেন’ সম্প্রচারিত হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই গত মাসে ভারতের আয়কর বিভাগ বিবিসির দিল্লি ও মুম্বাই অফিসে তল্লাশি চালায়। সরকারিভাবে যদিও ওই তল্লাশিকে ‘সার্ভে’ বলা হয়েছে। টানা ৬০ ঘণ্টা তল্লাশির পর আয়কর বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আয়সংক্রান্ত কিছু অসংগতি খতিয়ে দেখতেই ওই সার্ভে বা জরিপ। ২০১২ সাল থেকে বিবিসিকে পাঠানো বিভিন্ন প্রশ্নের ইতিবাচক উত্তর নাকি আয়কর বিভাগ পায়নি। তাই এই সার্ভে।

সংবাদপত্র ও সংবাদমাধ্যমের ওপর এই তল্লাশি নিয়ে ভারত সরকারকে নানা ধরনের সমালোচনা সহ্য করতে হয়েছে। দেশের বিরোধীরা সরকারের ‘ঔদ্ধত্যের’ সমালোচনা করে বলেন, বিরুদ্ধ স্বর প্রতিহত করার এই প্রচেষ্টা নতুন নয়। যে বা যারাই সরকারের সমালোচক, তা সে রাজনৈতিক দল বা গণমাধ্যম, তাদের বিরুদ্ধে সরকারি তদন্তকারী সংস্থাগুলোকে লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বিবিসির ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে। তথ্যচিত্রের সম্প্রচারই তাদের অপরাধ।

ভারত সরকার ও শাসক দল বিজেপি অবশ্য ওই তথ্যচিত্রকে ‘পশ্চিমা দুনিয়ার ভারতবিরোধী ষড়যন্ত্র’ বলে অভিহিত করেছে। বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের উত্থান ঠেকাতে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হচ্ছে। জি-২০ সম্মেলনকে সে জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক অবশ্য বিবিসির স্বাধীন ও স্বশাসিত চরিত্রের কথা জানলেও ওই তল্লাশি নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি। তবে তিনি জানিয়েছিলেন, তথ্যচিত্রের প্রতিপাদ্য বিষয় সম্পর্কে একমত নন। এই প্রথম যুক্তরাজ্য বিবিসি প্রসঙ্গ নিয়ে ভারতের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কথা বলল। যদিও কী ধরনের প্রশ্ন তারা তুলেছে এবং কোনো বিষয়ে আপত্তি অথবা প্রতিবাদ জানিয়েছে কি না, সে বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিছুই বলতে চাননি।

জয়শঙ্করের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার পর জেমস ক্লেভারলি রয়টার্সকে শুধু বলেছেন, ‘হ্যাঁ, বিষয়টির উত্থাপন আমি করেছি। জয়শঙ্করের সঙ্গে যা কথা হয়েছে, তা আমাদের দুজনের মধ্যে।’ ভারতের সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলা হয়েছে, ভারতে যারাই কাজ করে ও করবে, তাদের ভারতীয় আইন মেনেই চলতে হবে। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক