মোদির কথায়, রাষ্ট্রপুঞ্জ বর্তমানের বাস্তব ছবিটা তুলে ধরে না। তাই এই ধরনের প্রতিষ্ঠানের সংস্কার জরুরি, মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।
বর্তমান বিশ্বের বাস্তব ছবি তুলে ধরতে না পারলে রাষ্ট্রপুঞ্জ ও নিরাপত্তা পরিষদ স্রেফ 'কথাসর্বস্ব' প্রতিষ্ঠান হয়ে থেকে যাবে, জি-৭-র মঞ্চ থেকে কড়া বার্তা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। তাঁর প্রশ্ন, যেখানে শান্তি ও স্থিতাবস্থা সংক্রান্ত সমস্যাগুলি নিয়ে আলোচনার জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জ তৈরি হয়েছিল, সেখানে কেন এখনও এই নিয়ে বিশ্বের অন্যান্য মঞ্চগুলিকে মাথা ঘামাতে হচ্ছে? বার্তা একটাই। এবার এই সুবিশাল প্রতিষ্ঠানের ভোলবদল দরকার।

প্রধানমন্ত্রীর কথায়, 'কেন এখনও শান্তি ও স্থিতাবস্থা নিয়ে অন্যান্য একাধিক ফোরামে আলোচনা করতে হয় সেটি ভেবে দেখা দরকার। শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে স্থাপিত রাষ্ট্রপুঞ্জ কেন বর্তমান সংঘর্ষ-সংঘাত আটকাতে পারছে না?'

এতেই শেষ নয়। নরেন্দ্র মোদির প্রশ্ন, 'সন্ত্রাসবাদের সংজ্ঞাটুকু কেন রাষ্ট্রপুঞ্জ গ্রহণ করে উঠতে পারেনি? আত্মবীক্ষণ করলেই ছবিটা স্পষ্ট হয়। গত শতকে তৈরি এই প্রতিষ্ঠান একুশ শতকের ব্যবস্থার সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ নয়।'

তাঁর মতে, রাষ্ট্রপুঞ্জ বর্তমানের বাস্তব ছবিটা তুলে ধরে না। তাই এই ধরনের প্রতিষ্ঠানের সংস্কার জরুরি, মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। মোদির কথায়, 'গ্লোবাল সাউথের হয়েও সরব হতে হবে তাদের। না হলে শুধুমাত্র সংঘর্ষ শেষের কথাই বলে যাবে ওরা। সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রপুঞ্জ ও নিরাপত্তা পরিষদ স্রেফ একটি কথাসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান হয়ে থেতে যাবে।'

রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্কার চেয়ে দীর্ঘদিন ধরে চাপ দিচ্ছে নয়াদিল্লি। নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্যপদের দাবিদারও ভারত। এখনও পর্যন্ত, আমেরিকা, রাশিয়া, ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং চিন-এই পাঁচটি দেশই নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য। যে কোনও গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবে "ভেটো" দেওয়ার ক্ষমতা একমাত্র এই পাঁচজনেরই রয়েছে।

এই সদস্যসংখ্যা বাড়ানোর জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জের উপর চাপ বাড়ছে। ভারতের পাশাপাশি ব্রাজিল, দক্ষিণ আমেরিকা ও জাপানও এই সদস্যপদের অন্যতম দাবিদার। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সে ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী আসন এবং পরমাণু সরবরাহকারী গোষ্ঠীর (এনএসজি) সদস্যপদ নিয়ে ভারতের দাবিকে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল রাশিয়া। একসুর শোনা গিয়েছিল আমেরিকার গলাতেও। পরে ব্রিটেন এবং ফ্রান্সও সমর্থনের আশ্বাস দেয়। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক