ওয়াংচুকের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সম্পৃক্ততা জোরদার করার উপায় আলোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
ডোকলাম ইস্যুতে সদ্য থিম্পুর পাল্লা চিনের দিকে ভারী হতে দেখা গিয়েছে। সেই তর্ক বিতর্কের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়াল ওয়াংচুকের সঙ্গে মোদীর সাক্ষাৎ হল। দক্ষিণ এশিয়ার সাম্প্রতিক সময়ে এই সাক্ষাক্ষ কূটনৈতিক দিক থেকে বেশ প্রাসঙ্গিক। উল্লেখ্য, সোমবারই ভারতে ২ দিনের সফরে পা রেখেছেন ভুটানের রাজা।

মঙ্গলবার ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুকের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভুটানের রাজার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের পর পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা বলেছেন যে জাতীয় স্বার্থের উপর প্রভাব ফেলে এমন বিষয়গুলি রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে ভারত।

জানা গিয়েছে, ওয়াংচুকের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সম্পৃক্ততা জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। ভারতের বিদেশ সচিব বিনয়মোহন কোয়াত্রা জানিয়েছেন, বৈঠকে সরাসরি ডোকলাম এবং চিনের প্রসঙ্গে আলোচনা হয়নি। ভারত এবং ভুটান তাদের অর্থনৈতিক ও উন্নয়নমূলক অংশীদারিত্ব জোরদার করতে সম্মত হয়েছে। ভারত ভুটানের ১৩তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা এবং এর সংস্কার প্রকল্পগুলির জন্য প্রাসঙ্গিক আর্থিক সহায়তা প্রদান করার অঙ্গীকার করেছে।

উভয় দেশ দীর্ঘমেয়াদী এবং টেকসই বাণিজ্য সহজীকরণ ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করেছে, সেইসাথে বিদ্যমান জলবিদ্যুৎ বাড়ানো এবং অ-হাইড্রো পুনর্নবীকরণযোগ্য স্থানের দিকে অগ্রসর হওয়া সহ শক্তি সহযোগিতার নতুন দৃষ্টান্ত নিয়ে আলোচনা করেছে। বৈঠকে মহাকাশ, স্টার্ট-আপ এবং এসটিইএম শিক্ষা সহ নতুন খাতে সহযোগিতার বিষয়ে দুই দেশ আলোচনা করেছে।

মাত্র কদিন পূর্বেই ভুটারে প্রধানমন্ত্রী লোতে শেরিং ডোকলাম ইস্যুতে যে মন্তব্য করেছেন, তাতে হিমালয়ের পাদদেশের দেশটির সঙ্গে চিনের বিশেষ সখ্যতার অঙ্ক উঠে আসছে। যদিও ভুটান জানিয়েছে, তাদের সীমান্ত সংঘাত নিয়ে আগে যা অবস্থান ছিল, এখনও তাদের সেরকমই অবস্থান।

ভুটানের রাজাকে বিমানবন্দরে সাদরে গ্রহণ করেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ভারতের বিদেশমন্ত্রীর তরফে বিমানবন্দরে গিয়ে ভুটানের রাজাকে গ্রহণ করার ঘটনা কার্যত বোঝায় দিল্লির কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ থিম্পু। বেশ কয়েক বছর যাবতই ভারতের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দেশ হয়ে উঠেছে ভুটান। বিশেষত চিন যেখানে ভারতের বিরোধী রাস্তায় হাঁটছে। উল্লেখ্য, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী সদ্য বলেছেন, ডোকলাম সীমান্ত সংঘাত নিয়ে কথা বলার জন্য চিনেরও অধিকার রয়েছে।

এর আগে ডোকলাম এলাকা নিয়ে ২০১৭ সালে চিনের সঙ্গে ৭৩ দিনের সংঘাতে লিপ্ত হয়েছিল ভারত। ভারতের স্ট্র্যাটেজিক দিক থেকে এই ডোকলাম এলাকা বেশ প্রাসঙ্গিক। সেই জায়গা থেকে আচমকা ডোকলাম নিয়ে কথা বলার জন্য, চিনের সমানাধিকারের বার্তা দিয়ে থিম্পু যে পদক্ষেপ করেছে, তা কার্যত দিল্লির আতস কাচের তলায় রয়েছে। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক