প্রধানমন্ত্রী মোদীর নেয়া জল জীবন মিশনের আওতায় গত ৩৫ মাসে প্রায় সাড়ে ৬ কোটির বেশি নতুন ওয়াটার ট্যাপ সংযোগ দেয়া হয়েছে।
বাংলার বাড়িতে বাড়িতে পানীয় জল পৌঁছে দিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপধ্যায় চালু করেন ‘জলস্বপ্ন’ প্রকল্প। এই প্রকল্পের হাত ধরেই বাংলার ৪৪ লক্ষ ৩২ হাজার ২৯৩টি বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছে আর্সেনিক মুক্ত বিশুদ্ধ পানীয় জল। কেন্দ্রের হিসাবে এই সংখ্যাটা রাজ্যের সামগ্রিক বাড়ির ২৭.৬৮ শতাংশ।

রাজ্য সরকারের অভিযোগ, বাংলার নামে নেতিবাচক প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে গেরুয়া শিবির। বাংলায় মাত্র ২৬ শতাংশ বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে বলে প্রচার করে থাকে তাঁরা। কিন্তু সেটাকেও প্রামাণ্য তথ্য হিসাবে ধরে নিলেও দেখা যাচ্ছে কংগ্রেস শাসিত রাজস্থান ও বিজেপি শাসিত উত্তর প্রদেশের থেকে এগিয়ে রয়েছে বাংলা। অর্থাৎ মমতার জলস্বপ্ন কাছে হারতে হয়েছে মোদীর জল জীবন মিশন প্রকল্পকে।

দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কথায় কথায় যে উত্তর প্রদেশের উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন সেই যোগী রাজ্যে মাত্র ১৪.৭৬ শতাংশ বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ রয়েছে। সংখ্যার দিক থেকে অর্থাৎ ৩৮ লক্ষ ৯৯ হাজার ৯৪৭টি বাড়ি।

আবার কেন্দ্রের জলশক্তি মন্ত্রকের মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত যে রাজ্যের বাসিন্দা সেই কংগ্রেস শাসিত রাজস্থানে ২৫.৭৭ শতাংশ বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। সেই হিসাবেও দেখা যাচ্ছে এই দুই রাজ্যই, কিবা সংখ্যার দিক থেকে কিবা শতাংশের দিক থেকে, পিছিয়ে বাংলার থেকে।

শুক্রবার টুইট করে গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত জল জীবন মিশনের অধীনে সারা দেশের ৫১ শতাংশ বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। আর এর জন্য তিনি আবার ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে। তাঁর টুইটে বাংলার নামগন্ধও নেই কোথাও। কিন্তু বাস্তব তথ্য লুকিয়ে রাখা যায়নি। আর এই সব ঘটনার মধ্যে দিয়েই বার বার সামনে এসেছে এ রাজ্যের বঙ্গ বিজেপির নেতারা যে সব অভিযোগ তোলেন সেগুলো কত ভ্রান্ত।

এই ঘটনায় রাজ্যের জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতরের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, সব সময় উত্তর প্রদেশ নিয়ে প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলার নামে নেতিবাচক প্রচার চালান গেরুয়া শিবিরের নেতারা। বাংলায় মাত্র ২৬ শতাংশ বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে বলে প্রচার করে থাকে তারা। এই অসত্য তথ্যেও রাজস্থান ও উত্তর প্রদেশের থেকে এগিয়ে থাকছে বাংলা।

বাড়ি বাড়ি পানীয় জলের সংযোগের পাশাপাশি পানীয় জলের গুণমান পরীক্ষার জন্য রেকর্ড সংখ্যক ল্যাবরেটরি বা পরীক্ষা কেন্দ্র রয়েছে বাংলায়। এই মুহূর্তে রাজ্যে রয়েছে ২২০টি পরীক্ষা কেন্দ্র। যার মধ্যে ১৩৮টি এনএবিএল অনুমোদীত।

উত্তর প্রদেশে এই ধরনের অনুমোদীত পানীয় জলের গুণমান পরীক্ষা করার কেন্দ্র রয়েছে মাত্র ১টি। আর গুজরাতে ৭৪টি। এই সব তথ্য সামনে আসা উচিত। মানুষ দেখুন কোথায় কী কাজ হচ্ছে। তারপরে তাঁরাই বিচার করুন কে এগিয়ে আর কেই বা পিছিয়ে! খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক