ভারত-ভূটান সীমান্তে নতুন চেকপোস্টের উদ্বোধন


|

ভারত-ভূটান সীমান্তে নতুন চেকপোস্টের উদ্বোধন
এই নতুন অভিবাসন চেক পোস্ট তৃতীয় দেশের নাগরিকদের স্থল পথে প্রবেশ ও প্রস্থান করার সুযোগ প্রদান করে।
ভারত-ভুটানের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে, ভারত-ভুটান সীমান্তে আসামের ডাররাঙ্গায় অভিবাসন চেক পোস্ট (আইসিপি) ৭ নভেম্বর, ২০২৪-এ উদ্বোধন করা হয়েছে। এই আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে, আসামের রাজ্যপাল লক্ষ্মণ প্রসাদ আচার্য এবং দুই দেশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।

এই নতুন আইসিপি তৃতীয় দেশের নাগরিকদের ভূমি পথে প্রবেশ ও প্রস্থানের সুযোগ প্রদান করে, যা আঞ্চলিক সংযোগ ও সহযোগিতায় এক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি চিহ্নিত করে। ডাররাঙ্গা-সামদ্রুপ জংখার আইসিপি উদ্বোধনটি ভুটানের রাজা ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে ভারতের সফরের সময় নেওয়া সিদ্ধান্তের একটি অংশ, যেখানে দুই দেশ সীমান্ত অবকাঠামো উন্নয়ন এবং ডাররাঙ্গা (আসাম) ও সামদ্রুপ জংখার (ভুটান) পথকে একটি আনুষ্ঠানিক প্রবেশ পয়েন্ট হিসেবে ঘোষণা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।

ভারত-ভুটান বন্ধুত্বের পথে এক ধাপ এগিয়ে
প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে ডাররাঙ্গা আইসিপি উদ্বোধনকে পূর্ব ভুটানের জন্য পর্যটন এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির এক নতুন দ্বার হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি ভারতের সরকারকে এই উদ্যোগে সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, “ডাররাঙ্গায় এই অভিবাসন চেক পোস্ট চালু করা আমাদের সংযোগ জোরদার করতে এবং আঞ্চলিক উন্নয়নের জন্য আমাদের যৌথ দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়ন করতে একটি অগ্রগতি। এই নতুন প্রবেশ পয়েন্ট পূর্ব ভুটানে পর্যটনকে উৎসাহিত করবে এবং অর্থনৈতিক সুযোগ বাড়াবে।”

আসামের রাজ্যপাল লক্ষ্মণ প্রসাদ আচার্য এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে ভারত ও ভুটানের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বের ওপর আলোকপাত করেন। তিনি সীমান্ত সংযোগকে সমর্থনকারী সাম্প্রতিক অবকাঠামো উদ্যোগগুলোর প্রশংসা করেন এবং এই আইসিপিকে “মানুষে মানুষে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার এক নতুন মাইলফলক” বলে অভিহিত করেন।

এখন পর্যন্ত তৃতীয় দেশের নাগরিকরা শুধুমাত্র পারো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বা জয়গাঁও-ফুন্টশোলিং ভূমি পথে ভুটানে প্রবেশ করতে পারত। নতুন ডাররাঙ্গা ভূমি পথ পর্যটন, বাণিজ্য এবং আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগের জন্য নতুন সুযোগ উন্মোচন করে, বিশেষত পূর্ব ভুটানের অপেক্ষাকৃত কম পরিদর্শিত অঞ্চলগুলোর জন্য।

ভুটান সরকারের প্রত্যাশা, এই নতুন প্রবেশ পয়েন্ট পূর্ব অঞ্চলের ভারসাম্যপূর্ণ উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে, কারণ এটি পর্যটক এবং বিনিয়োগকারীদের থিম্পু ও পারোর বাইরে অন্যান্য অঞ্চলে অনুসন্ধান করতে উৎসাহিত করবে। এই উন্নয়ন ভুটানের টেকসই পর্যটন নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যা অর্থনৈতিক সুবিধা প্রদানের পাশাপাশি দেশের অনন্য সংস্কৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণে সহায়তা করে।

আধুনিক অবকাঠামো এবং সুবিধা
ভারতের ল্যান্ড পোর্টস অথরিটি (এলপিএআই) কর্তৃক নির্মিত ডাররাঙ্গা আইসিপি দক্ষতা এবং সুবিধার প্রতি জোর দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে। ১৪.৫ একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই আইসিপিতে কাস্টমস প্রক্রিয়াকরণ, অফিস এবং আবাসন সুবিধাসহ পার্কিং ও লোডিং/আনলোডিং জোন রয়েছে, যা বাণিজ্যিক সরবরাহের জন্য সহায়ক। ওজন পরিমাপক যন্ত্র, গুদাম এবং উদ্ভিদ কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থা সহ আধুনিক সুবিধাগুলো ক্রস-বর্ডার কার্যক্রমের নিরাপত্তা এবং দক্ষতা বজায় রাখে।

সাইটটির কৌশলগত অবস্থান দুই দিক থেকেই সুসংযুক্ত। ভারতে, এটি রঙ্গিয়া সংলগ্ন জাতীয় সড়ক ২৭-এর সঙ্গে সংযুক্ত, যা পণ্য ও ভ্রমণকারীদের মসৃণ পরিবহনে সহায়তা করে। অন্যদিকে, ভুটানে সামদ্রুপ জংখারের কাস্টমস অবকাঠামো বাণিজ্য প্রক্রিয়াকরণকে শক্তিশালী করে। সামদ্রুপ জংখার থেকে তাসিগাং পর্যন্ত মহাসড়কের চলমান উন্নয়ন সংযোগ আরও মসৃণ করার প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

উন্নয়নের নতুন দিগন্ত
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভারতের স্বরাষ্ট্র বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বান্দি সঞ্জয় কুমার, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী পাবিত্র মার্ঘারিটা, ভুটানের বিরোধীদলীয় নেতা পেমা চেওয়াং এবং দুই দেশের নির্বাচিত প্রতিনিধি ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।

ভারত ও ভুটানের এই সহযোগিতা তাদের আঞ্চলিক উন্নয়ন ও সংযোগের জন্য যৌথ দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন। ডাররাঙ্গা আইসিপি চালু হওয়ার ফলে উভয় দেশের অংশীদাররা বাণিজ্য ও সহযোগিতার নতুন সুযোগ প্রত্যাশা করছেন, যা পারস্পরিক সুবিধা প্রদান করবে।

ডাররাঙ্গা আইসিপি চালু হওয়া আসাম ও পূর্ব ভুটানের অর্থনৈতিক কার্যক্রমের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুঘটক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই নতুন প্রবেশ পয়েন্ট থেকে উদ্ভূত বাণিজ্য সুযোগ পর্যটন, কৃষি এবং খুচরা খাতে প্রবৃদ্ধি বাড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পূর্ব ভুটানের অঞ্চল, যা এখন পর্যন্ত ভ্রমণকারীদের দ্বারা কম গুরুত্ব পেয়েছে, স্থানীয় ব্যবসায়িক কার্যক্রমকে সমর্থন করে এবং নতুন অর্থনৈতিক সম্ভাবনা উন্মোচন করে ইতিবাচক প্রভাব অনুভব করতে পারে।

ভারতের জন্য, এই আইসিপি সীমান্ত বাণিজ্য, পর্যটন এবং স্থানীয় উদ্যোগগুলোর জন্য একটি বড় উৎসাহ হতে পারে, কারণ এটি মানুষ এবং পণ্যের বৃদ্ধি প্রয়োগে সহায়ক। তদ্ব্যতীত, এই আইসিপি ভারতের “অ্যাক্ট ইস্ট” নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যা উন্নত সংযোগ এবং অবকাঠামোর মাধ্যমে পূর্বের প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার দিকে দৃষ্টি দেয়।

ডাররাঙ্গা আইসিপি চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, উভয় পক্ষের কর্মকর্তারা এর সম্ভাবনা সম্পর্কে আশাবাদী। আধুনিক সুবিধা এবং কৌশলগত অবস্থানের সঙ্গে, এই সীমান্ত ক্রসিং ভ্রমণকারী এবং ব্যবসায়ীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশ পয়েন্ট হয়ে উঠছে এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট রূপান্তরিত করার সম্ভাবনা রয়েছে।

ডাররাঙ্গা আইসিপি উদ্বোধন ভারত-ভুটান সম্পর্কের এক নতুন অধ্যায় চিহ্নিত করে, যা বিশ্বাস, সহযোগিতা এবং সমৃদ্ধির যৌথ দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। সূত্র: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক

ভারত সফরে এসেছেন নেপালের সেনাপ্রধান
ভারত সফরে এসেছেন নেপালের সেনাপ্রধান
এই সফর দুই দেশের সামরিক সম্পর্ক দৃঢ় করার প্রতিশ্রুতি ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা উন্নত করার লক্ষ্যে কেন্দ্রিত।
|
ভারত-নেপাল পর্যটন সম্পর্ক: কাঠমান্ডুতে প্রথম সভা
ভারত-নেপাল পর্যটন সম্পর্ক: কাঠমান্ডুতে প্রথম সভা
এই সভাটি মহাকুম্ভ ২০২৫-এর একটি উদ্বোধনী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করেছে, যা উত্তর প্রদেশের প্রয়াগরাজে অনুষ্ঠিত হবে।
|
গগনযানের ‘ওয়েল ডেক’ প্রস্তুতিতে সফল ইসরো-নৌবাহিনী
গগনযানের ‘ওয়েল ডেক’ প্রস্তুতিতে সফল ইসরো-নৌবাহিনী
গগনযান মিশন সফল করতে মহাকাশ থেকে নিরাপদে ক্রু ফিরিয়ে আনার পথে বড় অগ্রগতি ভারতের নৌবাহিনী এবং ইসরো।
|
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অভিযোজনের শীর্ষে ভারত: গবেষণা
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অভিযোজনের শীর্ষে ভারত: গবেষণা
নতুন দক্ষতা অর্জনে ভারতীয় কর্মীদের সক্রিয় ভূমিকা এবং প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকার প্রচেষ্টা উঠে এসেছে এক প্রতিবেদনে।
|
“রাশিয়া-ভারত বন্ধুত্ব সর্বোচ্চ পাহাড়ের চেয়েও উঁচু”
“রাশিয়া-ভারত বন্ধুত্ব সর্বোচ্চ পাহাড়ের চেয়েও উঁচু”
রাজনাথ পুতিনকে বলেছেন, নয়াদিল্লি ও মস্কোর ‘বন্ধুত্ব’ পৃথিবীর সর্বোচ্চ পাহাড়ের চেয়েও উঁচু এবং গভীরতম সমুদ্রের চেয়েও গভীর
|